হযরত মাওলানা মো. আব্দুল জলিল (বিয়াবালী হুজুর) তিনি এমন এক মানুষ, যার জীবনের ধ্যান-জ্ঞান হলো নামায, ইবাদত-বন্দেগী ও শরীয়তসম্মত জীবন যাপন। তিনি কাউকে গালি দিয়েছেন বা কষ্ট দিয়েছেন এমন কথা জীবনেও শুনিনি। তিনি সারাজীবন ফুলতলী কামিল মাদরাসায় দারস দিয়েছেন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ, সহকর্মী ও শিক্ষার্থী সকলের নিকট তিনি সমাদৃত। ঐ এলাকার একটি মসজিদে (এওলাসার গ্রামে) একাধারে দীর্ঘ পঁচিশ বছর তিনি ইমামতি করেছেন। কিন্তু কোনো মুসল্লি তাঁর বিরুদ্ধে টু শব্দ করেনি। সে গ্রামের মানুষের ভাষ্য তিনি একজন ফেরেশতা।
আসলেই বিয়াবালী হুজুর একজন মানবরূপী ফেরেশতা। তিনি অত্যন্ত সহজ-সরল ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করেন। সকলের জন্য আন্তরিক কল্যাণ কামনা করেন। কোনো মানুষকে নিয়ে কোনো বিরূপ সমালোচনা তাঁর মুখে কেউ শুনেনি। একদা তিনি বাজারে কেনাকাটা করতে গেছেন। এক দোকান থেকে কিছু সামগ্রী কেনার পর টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দেখেন তাঁর পকেট খালি। তখন দোকানদারকে বললেন: ভাই, আমার থেকে আরো একজনের প্রয়োজন হয়তো বেশি। তাই তিনি টাকা নিয়ে গেছেন। ব্যাগটা রেখে দেন। আমি অন্য সময় নেব। দোকানদার তো হতভম্ভ। তিনি চোর বা পকেটমারকে গালিগালাজ তো করছেনই না, বরং সম্মানসূচক (তিনি) শব্দ ব্যবহার করছেন!
বিয়াবালী হুজুর বারো মাস ছাতা ব্যবহার করতেন। এর একটি কারণ রোদ কিংবা বৃষ্টি থেকে বাঁচা। অন্য আরো একটি কারণ ছিল চোখকে হেফাযত করা। আগে গ্রামের রাস্তা ছোট ছিল। রাস্তায় কোনো মহিলার পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি ছাতা দিয়ে নিজেকে আড়াল করে নিতেন। অনেক সময় নিজে রাস্তা থেকে নেমে মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলে যাওয়ার পথ করে দিতেন।
তাকওয়ার গুণে বিভূষিত এ মনীষী এখন অসুস্থ। তাঁর দ্রুত আরোগ্যের জন্য সকলের নিকট দুআ কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাঁর এ প্রিয় বান্দা নেক হায়াত ও শিফায়ে কামিলা দান করেন। আমীন।